বেনাপোল কাস্টমসে চলছে ৫৬ সিপাই পদে শারীরিক পরীক্ষা: পরীক্ষার্থী ২৭১০০: আবাসিক ব্যবস্থা সংকুলানে ভোগান্তিতে অধিকাংশ
শেখ কাজিম উদ্দিন : বেনাপোল কাস্টমস হাউসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দীর্ঘ তিন বছর পর অনুষ্ঠিত হলো শরীরিক ফিটনেস পরীক্ষা। শুক্রবার(২২ নভেম্বর) সকালে বেনাপোল কাস্টমস হাউস প্রাঙ্গণে প্রথম ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যা আজ শনিবার শেষ হয়ে আগামি ২৯ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
কাস্টমস সুত্রে জানাগেছে, এখানে ৫৬ জন সিপাই নিয়োগের বিপরীতে পরীক্ষা দিচ্ছেন ২৭ হাজার ১’শ পরীক্ষার্থী। আবেদন পড়েছিল ৩১ হাজার।
তবে, বেনাপোল একটি ছোট শহর হওয়ায় এখানে পর্যাপ্ত পরিমানের আবাসিক হোটেল ব্যবস্থা না থাকায় এবং কাস্টমসের জনবল কম থাকায় বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা অধিকাংশ পরীক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরীক্ষার্থীরা।
দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা ২৭ হাজার ১’শ পরীক্ষার্থীর কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে, কেউ হোটেলে, কেউবা বিভিন্ন ছাদের নিচে আশ্রয় নিয়ে সময়ক্ষেপন করছেন। অনেকে আবার টাকার অভাবে স্থানীয়দের সহয়তায় নিচ্ছেন বলে জানাযায়।
কাওছার নামে এক ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী জানান, কাস্টমসে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় কাজের ধীর গতিতে তাদের ভোগান্তি বেড়েছে। পরীক্ষা দিতে কাস্টমসের ভিতরে ঢুকতে না পেরে প্রধান সড়কের উপর অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। সেখানে আশপাশে বসার কোনো ব্যবস্থা নেই। টানা রোদে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রবেশ পত্রে সকাল ১১টায় পরীক্ষার সময় উল্লেখ করেছেন। এসে দেখি ভিন্ন রকম। ৩টা পর্যন্ত দাড়িয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত ডাকা হয়নি। কখন সিরিয়াল পাব তাও জানতে পারছিনা। এছাড়া এ পরীক্ষায় নিয়োগ কমিটি কর্তৃক আত্মীয়করণ হওয়ায় সাধারণদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনিসহ অসংখ্য পরীক্ষার্থীরা।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ নির্বাচন কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, এখানে সাংবাদিকদেরতো আমন্ত্রণ করা হয়নি। পরীক্ষার বিষয়ে কিছু লেখালেখিতে সাংবাদিকদের কোনো কাজ আছে বলেও আমার মনে হয়না।পরে তিনি আর কোন তথ্য দেননি।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল কাস্টম হাউজে জনবল সংকট নিরসনে ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ১৩ বিভাগে ৯৪ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় বেধে দেয়া হয়েছিল সে বছরের ১৫ নভেম্বর।
পদের মধ্যে ছিল কম্পিউটার অপারেটর ৪ জন, সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর ২ জন, সাঁট-লিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর ২ জন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ৫ জন, টেলিফোন অপারেটর ১ জন, ফটোকপি অপারেটর ২ জন, ইলেক্ট্রিশিয়ান ১ জন, গাড়িচালক ১০ জন, সিপাহী ৫৬ জন, উচ্চমান সহকারী ৬ জন, ক্যাশিয়ার ১ জন, অফিস সহায়ক ৩ জন ও নিরাপত্তা প্রহরী ১ জন।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৩টি বিভাগের মধ্যে কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৩৭৮টি, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৯১টি, সাঁট লিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ৮০৭টি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে ৫৩৩২টি, টেলিফোন অপারেটর পদে ৪৮টি, ফটোকপি অপারেটর পদে ২১০টি, ইলেক্ট্রিশিয়ান পদে ৭৬টি, গাড়িচালক ৯০৭টি, সিপাই পদে ৩১০০০টি, উচ্চমান সহকারী ১৮৬১০টি, ক্যাশিয়ার পদে ৪১৯টি, অফিস সহায়ক পদে ২০৩৯টি এবং নিরাপত্তা প্রহরী পদে ১৪১টি আবেদন জমা পড়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন